বাবা খুবই অসুস্থ, রোজগার সম্পূর্ণ বন্ধ! দু’মুঠো খাবারের জন্য ভাঙা সাইকেলে মিষ্টি বিক্রি করছে ক্লাস সেভেনের মেধাবী সুমন

আমরা ছোট কিছু না পেলেই হতাশ হয়ে পড়ি অথচ অনেককে ছোট থেকেই সংগ্রাম করতে হয়। যে বয়সে বাচ্চারা রূপকথার গল্প শোনে সেই বয়সে কিছু বাচ্চাকে কঠিন বাস্তবের সম্মুখীন হতে হয়।আর্থিক প্রতিবন্ধকতা মানুষের শৈশব কেড়ে নেয়। আর এই সংসারের হাল ধরতে নিজের স্বপ্নপূরনের তাগিদে নামতে হয় কাজে।
পরিবার বলতে রয়েছে বাবা মা আর তিন বছরের ছোট্ট বোন। বাবা দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস রোগে ভুগছেন , তাছাড়াও একাধিক রোগ তাকে শয্যাশায়ী করে দিয়েছে। একেই নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতোন অবস্থা তারওপর লকডাউনে সমস্ত উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যায় তাদের। শেষপর্যন্ত জীবন সংগ্রামের লড়াই এ মাঠে নামতে হয় ক্লাস সেভেনের ছেলেকে। মা নয়নমনি দেবী বাড়িতে মিষ্টি বানাতে শুরু করেন আর সেই মিষ্টি নিজের ভাঙা সাইকেলে চেপে বিক্রি করে বেরায় ছোট্ট সুমন। এইভাবেই এইটুকু বয়সে নিজের ও পরিবারের সমস্ত দ্বায়িত্ব নিজের কাধে নিয়েছে সুমন।
দরিদ্র অথচ মেধাবী এই রকম অজস্র উদাহরণ রয়েছে গ্রাম বাংলা আর সুমন তারই উদাহরন। যার দিন শুরু হয় ভোরবেলা উঠে গ্রামে মিষ্টি ফেরি করে তারপর নিজের পড়াশোনাও চালায় সে। বর্ধমানের মেমারি অঞ্চলের খাড়গ্রাম এর এই অভাবী পড়ুয়া বর্তমানে মেমারি খাড়গ্রামের জুনিয়র হাইস্কুলে ক্লাস সেভেনের পড়ুয়া সে। পুরো নাম সুমন ঘোষ। অভাবের জন্য স্কুলে ভর্তিও হতে পারেনি সে পরবর্তীতে স্কুলের শিক্ষকদের সহায়তায় ভর্তি হয়।
সারাদিন ঘুরে ঘুরে ৫-৬শো টাকার মত আয় করে সুমন আর তা থেকেই সংসার সামলে নিজের পড়াশোনা ও টিউশনির খরচ চালায়। কিন্তু তারপরেও হাল ছাড়েনি। পড়াশোনায় যথেষ্ট মেধাবী একদিন সমস্ত প্রতিবন্ধকতা দূর করে জীবনযুদ্ধে জয়ী হবে সে এই কামনায় করেছেন সবাই।