আদরের নাতনির পড়াশোনা চালাতে দাদুর বলিদান, শেষ সম্বল বাড়ি বিক্রি করে অটোতেই রাত কাটাচ্ছেন বৃদ্ধ

ছেলে মেয়েকে মানুষের মতন মানুষ করে তুলতে, তাদের চাহিদা মিটাতে অনেক সাধারণ ঘরের বাবা মা’য়েরা কষ্ট করেন। নিজের সবটুকু দিয়ে ছেলেমেয়েকে সুখী রাখতে চান তারা৷ তাই বাবা মা’য়ের কাছে সন্তানের হাসি, তার ভবিষ্যতই সব। আমরা প্রতিদিনই এমন ঘটনার নিদর্শন পাই। আর তা আমাদের মন ভালো করে দেয়। কিন্তু এমন যদি হয় নাতনিকে পড়ানোর জন্য দাদু তার নিজের শেষ সম্বলটুকু বিকিয়ে দিয়েছেন! হ্যাঁ এমন ঘটনাই সম্প্রতি ঘটে গিয়েছে। আর এই ঘটনার পর চারিদিকে তা ছড়িয়ে গিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রে। সেখানের এক বৃদ্ধা নাতনির পড়াশোনার জন্য নিজের ভিটেমাটি বিক্রি করে দিয়েছেন।
তিনি পেশায় একজন অটোচালক। এখন সেই অটোতেই এখন রাত্রিযাপন করেন তিনি। বৃদ্ধ অটোচালকের নাম দেসরাজ। সারাদিন অটো চালান ওই বৃদ্ধ। অটো চালিয়েই তার আয় হয়৷ এখন অটো চালানোর পর রাত্রে ওই অটোতেই ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। শেষ সম্বল বেচে দিয়েও বৃদ্ধের মুখে নেই দুঃখের চিহ্ন। নাতনির স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি সব করতে পারেন। তার মুখে নেই কোনো কষ্টের চিহ্ন কিংবা সরকারের প্রতি কোনো নালিশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পর সকলেই বৃদ্ধকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। জানা গিয়েছে, গত দুই বছরের মধ্যে দেসরাজ নামের ওই বৃদ্ধ মানুষটি তার দুই ছেলেকে হারিয়েছেন৷
ছয় বছর আগে তার বড় ছেলে কাজের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হলেও আর ঘরে ফেরেনি। এর ঠিক দুই বছর পর ছোট ছেলে আত্মঘাতী হন। এরপরই দেসরাজকে দুই পুত্রবধূ ও নাতি নাতনিদের দায়িত্ব নিতে হয়৷ বাড়িতে সদস্য সংখ্যা ৭ জন। জানা গিয়েছে, দেসরাজ প্রতিদিন অটো চালিয়ে মাসে আয় করেন ১০,০০০ টাকা। এর মধ্যে ৬,০০০ টাকাই নাতি নাতনিদের পড়াশোনার পিছনে চলে যায়৷ কোনোক্রমে বাকি টাকা দিশে সংসার চালাতেন দেসরাজ।
এরপর ঘটে আরেক কান্ড। একদিন তার বড় নাতনি দ্বাদশের পরীক্ষায় দারুণ ফল করেন। সে জানায় দিল্লিতে বি.এড কোর্স করবে। কিন্তু নাতনির এই স্বপ্ন পূরণ করা দেসরাজের পক্ষে সম্ভব নয়৷ তার যা আয় তা দিয়ে কোনোমতেই সম্ভব নয়। আর এই অসম্ভবকে সম্ভব করতে দেসরাজ তার শেষ সম্বল মাথার ছাদ বিক্রি করে দেন। আর এরপরই দেসরাজের নিজের মাথার ছাদ হয়েছে অটো।